০১ নভেম্বর ২০২৫ | ১৭ কার্তিক ১৪৩২
বিশ্ব
লন্ডন বনাম নিউ ইয়র্ক: কোন শহর এগিয়ে জীবনের মান, নিরাপত্তা ও ব্যয়ের দিক থেকে?

image

হলুদ ট্যাক্সি ও কালো ক্যাব, বিগ অ্যাপল ও বিগ স্মোক — দুই শহরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ইতিহাসে বহু পুরনো। এবার এই তুলনার কেন্দ্রে এসেছে জীবনযাত্রার ব্যয়, নিরাপত্তা, পরিবেশ, পর্যটন ও সংস্কৃতি। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে ফের আলোচনায় লন্ডন বনাম নিউ ইয়র্ক বিতর্ক। প্রশ্ন একটাই—জীবনের মানে কে এগিয়ে?

লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক—দুই শহরেই জীবন ব্যস্ত, ব্যয়বহুল ও বৈচিত্র্যময়। কিন্তু বিশ্লেষণ বলছে, পার্থক্য অনেক।

💰 বেতন ও ব্যয়:
নিউ ইয়র্কে বেতন বেশি হলেও ব্যয়ও আকাশচুম্বী। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে নিউ ইয়র্কের গড় বার্ষিক বেতন দাঁড়িয়েছে £৭৪,৫১৬, যেখানে লন্ডনে তা £৪৪,২০০। কিন্তু দুই শয়নকক্ষের একটি ফ্ল্যাট ভাড়ায় পার্থক্য £১,৪০০ পর্যন্ত—লন্ডনে গড় £২,১০০, নিউ ইয়র্কে £৩,৫০০।

🏠 সম্পত্তির দাম:
নিউ ইয়র্কে গড় সম্পত্তির দাম £৯০৩,০০০, লন্ডনের তুলনায় প্রায় £৩৬০,০০০ বেশি। ফলে লন্ডনবাসীরা সম্পত্তি ক্রয়ে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে।

🔒 নিরাপত্তা ও অপরাধের হার:
অপরাধের দিক থেকে লন্ডন কিছুটা এগিয়ে। প্রতি ১০০,০০০ জনে লন্ডনে অপরাধের হার ৯৬৯, যেখানে নিউ ইয়র্কে ৭০৩। তবে সহিংস অপরাধের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র—লন্ডনে প্রতি ১ লক্ষে ১.১৭ জন খুনের শিকার, নিউ ইয়র্কে তা ৪.৫১।

🌿 বায়ু ও পরিবেশ:
বায়ু মানে নিউ ইয়র্ক সামান্য এগিয়ে—PM2.5 সূচক অনুযায়ী নিউ ইয়র্কে ৭.৫, লন্ডনে ৭.৮। তবে সবুজ এলাকার দিক থেকে লন্ডন সেরা, যেখানে শতাধিক পার্ক শহরজুড়ে বিস্তৃত।

🏙️ পর্যটন ও সংস্কৃতি:
মহামারীর পর লন্ডনে পর্যটক সংখ্যা দ্রুত ফিরেছে—গত বছর বিদেশি দর্শনার্থীর সংখ্যা ২১ মিলিয়ন, যেখানে নিউ ইয়র্কে ছিল ১১.৭ মিলিয়ন।
রেস্টুরেন্ট ও বার সংস্কৃতিতেও লন্ডন এগিয়ে। গ্রেটার লন্ডনে ৮৫টি মিশেলিন তারকা রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যা নিউ ইয়র্কের চেয়ে ১১টি বেশি।

🎭 বিনোদন ও খেলাধুলা:
ওয়েস্ট এন্ডে মিউজিক্যাল টিকিটের দাম ব্রডওয়ের তুলনায় তিনগুণ কম।
লন্ডনে ৭টি প্রিমিয়ার লিগ দল, মিডলসেক্স ও সারে ক্রিকেট ক্লাব, এবং বিশ্বখ্যাত রাগবি ক্লাব রয়েছে। নিউ ইয়র্কেও ১৩টি শীর্ষ পর্যায়ের পেশাদার দল সক্রিয়।

🌤️ আবহাওয়া:
নিউ ইয়র্কে আবহাওয়া চরম হলেও সূর্যের দেখা বেশি—প্রতি বছর ২,৫০০ ঘণ্টা রোদ থাকে, যেখানে লন্ডনে মাত্র ১,৪০০ ঘণ্টা।

লন্ডনের ঐতিহাসিক স্থাপনা, উন্নত পরিবহনব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা শহরটিকে বসবাসের জন্য অনুকূল করে তুলেছে। অন্যদিকে নিউ ইয়র্কের দ্রুত অর্থনীতি, উচ্চ বেতন ও প্রাণবন্ত জীবনযাত্রা তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে। তবে জীবনযাত্রার ব্যয় ও ভাড়ার বোঝা অনেকের জন্য নিউ ইয়র্ককে কম আকর্ষণীয় করে তোলে।

লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক—দুটি শহরই বিশ্বের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। তবে জীবনযাত্রার মান, নিরাপত্তা ও ব্যয়ের দিক থেকে তুলনা করলে, লন্ডন কিছুটা বেশি ভারসাম্যপূর্ণ ও স্থিতিশীল। অন্যদিকে, যারা রোদ, উচ্চ আয় ও দ্রুতগতি পছন্দ করেন, তাদের জন্য নিউ ইয়র্কই স্বপ্নের শহর।












অনলাইন ডেস্ক

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading