যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করায় ট্রাম্পের ‘শাস্তিমূলক’ শুল্ক, ক্ষুব্ধ ভারতের পাল্টা জবাব।
রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৬ আগস্ট) এক নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এর ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট আমদানি শুল্ক দাঁড়ালো ৫০ শতাংশে—যা চীনের তুলনায় ২০ শতাংশ এবং পাকিস্তানের তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি। নতুন শুল্ক কার্যকর হবে ২১ দিনের মধ্যে।
ট্রাম্প বলেন, “ভারত আমাদের ভালো বাণিজ্যিক সঙ্গী নয়... তারা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। তাই এই বাড়তি শুল্ক আরোপ করা জরুরি।” তিনি আরও বলেন, যদি ৯ আগস্টের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তি না হয়, তাহলে শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, “আমাদের ওপর এই টার্গেটিং সম্পূর্ণভাবে অন্যায়, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।” ভারত জানায়, ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বাজারভিত্তিক সিদ্ধান্তে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হয়েছে।
এছাড়া, ভারত তুলে ধরে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৪ সালে রাশিয়া থেকে ৬৭.৫ বিলিয়ন ইউরোর এলএনজি আমদানি করেছে, আর যুক্তরাষ্ট্র নিজেও রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম, প্যালাডিয়াম, সার এবং বিভিন্ন কেমিক্যাল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। ট্রাম্প একই সাথে পাকিস্তানের জন্য শুল্ক কমিয়ে ১৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন এবং নতুন বাণিজ্য চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন, যাতে পাকিস্তানের তেল মজুত উন্নয়নের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক সিদ্ধান্তে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন করে চাপে পড়েছে। যদিও ভারতীয় অর্থনীতিতে ২৫% শুল্কে জিডিপি-তে ০.২% প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হয়েছিল, তবে ‘শাস্তিমূলক’ ৫০% শুল্কে প্রভাব আরও গভীর হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এবং ব্রিকস জোটের অভ্যন্তরীণ ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: