নেপালে দুর্নীতি ও সামাজিকমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে তরুণদের বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে জেন জি বিক্ষোভকারীরা।
নেপালে তরুণদের চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে (মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডু ও বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে হামলা চালায়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বেশ কিছু স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়। কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, ললিতপুরে দেশটির তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুঙের বাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঁসেপাটিতে অবস্থিত উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাড়িতেও হামলা হয়। এর আগে পদত্যাগ করা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাসভবনও বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের শিকার হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নেপালি কংগ্রেস সভাপতি শেরবাহাদুর দেউবার বুদ্বানিলকণ্টায় অবস্থিত বাড়িতে হামলার চেষ্টা করা হলেও, নিরাপত্তা বাহিনী আগেই প্রতিহত করে। এছাড়া প্রধান বিরোধী দল সিপিএন (মাওইস্ট সেন্টার) এর চেয়ারম্যান পুষ্পকমল দাহালের খুমলটারের বাসভবনেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, কড়া নিরাপত্তা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন জেলায় মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাদেশিক নেতাদের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে জেন জি বিক্ষোভকারীরা। এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় সরকারের নির্দেশে এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিকমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি সামাজিকমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তরুণদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তোলে। সোমবার প্রথম দিনের সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা হয়, যাতে অন্তত ১৯ জন নিহত হন। সহিংসতার চাপে নেপাল সরকার শেষ পর্যন্ত সামাজিকমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
নেপালের তরুণদের এই আন্দোলন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুর্নীতি বিরোধী দাবির সঙ্গে সামাজিকমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ইস্যু যুক্ত হওয়ায় এ বিক্ষোভ আরও জোরালো রূপ নিয়েছে। সহিংসতা থামাতে সরকার কঠোর অবস্থান নিলেও আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: