জুলাই ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া খন্দকার মামুন বিপ্লবের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নির্মিত হলো ‘শহীদ মামুন বিপ্লব চত্বর’।
রবিবার (০৩ আগষ্ট) বিকালে শহীদ স্মরণে স্থাপিত এই স্মরণিকাটি উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সংগঠক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
স্মরণিকার উদ্বোধনী শেষে ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু সাংবাদিকদের বলেন, “আমি একজন বিবেকবান মানুষ, দেশপ্রেমিক মানুষ। আমার বিবেক বারবার নাড়া দিচ্ছিল, আমি কেন শহীদদের জন্য কিছু করছি না। এই দায়বদ্ধতা থেকেই আমার দলকে পাশে নিয়ে, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই শহীদ স্মরণিকা নির্মাণ করেছি।”
তিনি বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগের প্রায় এক বছর অতিক্রম হলেও অনেক প্রতিশ্রুতি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। রাস্তার নামকরণ, ভবনের নামকরণ কিংবা শহীদ পরিবারকে যথাযথ সম্মান—এসব বিষয়ে দায়িত্বশীলদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
“আমরা এই অঙ্গীকার আগেই করেছিলাম। এখন সময় এসেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, তখন অনেকে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। আপনি দুবারের সংসদ সদস্য, আপনি শহীদ পরিবারের খবর নিয়েছেন কিনা। আমি বলতে চাই, যতটুকু পারছি আমরা করছি। দল যদি ক্ষমতায় আসে, ইনশাআল্লাহ আরও বড় কিছু করা হবে।”
তিনি এ সময় সব রাজনৈতিক পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমি কোনো বিতর্কে যেতে চাই না। কেউ যদি এই উদ্যোগকে আরও বড় করতে চায়, আমি স্বাগত জানাই। কেউ ব্যক্তি বা দলগতভাবে শহীদদের সম্মানে কাজ করতে চাইলে করুক। আমি কৃতজ্ঞতা জানাবো। শহীদদের সম্মানেই আমাদের সকল প্রচেষ্টা হওয়া উচিত।”
এ সময় এনসিপি একক স্মরণিকাটির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি জানি না তারা বাধা দিয়েছে কিনা, এবং আমি এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কারণ তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। শহীদ মামুন বিপ্লব সরাসরি আন্দোলনের ময়দানে ছিলেন। তাদের বাধা দেওয়ার কোনো কারণ নেই। তারা যদি কিছু করতে চায়, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে করুক, নইলে তারাও নিজ উদ্যোগে করুক। আমরা কেউ বাধা দিব না।”
ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু আরো বলেন, “আমি একজন শহীদের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি, অন্যরা অন্য শহীদদের জন্য করুক। কেউ চাইলে পাঁচজন, দশজন শহীদের নামেও করুক। আমি বিতর্ক চাই না। আমি চাই শহীদদের যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হোক। এটাই আমার একমাত্র প্রত্যাশা।”
উল্লেখ্য, শহীদ মামুন বিপ্লব গত বছরের জুলাইয়ে সরকারের বিরুদ্ধে চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুস্থলেই আজ নির্মিত হলো এই চত্বর। একটি দৃশ্যমান স্মৃতি, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আন্দোলনের সত্য ইতিহাস মনে করিয়ে দেবে।
মোঃ হাফিজুর রহমান
Comments: