ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ির তেলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তেল নয়, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, একই মালামালের একাধিক ভাউচার তৈরি এবং ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও-ঘ-০০৩০ নম্বরের জিপগাড়িতে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত শহরের রূপসী বাংলা অয়েল ব্যাংক পাম্প থেকে ১ লাখ ৩ হাজার ৮১৮ টাকার জ্বালানি তেল ক্রয়ের ভাউচার দেখানো হয়েছে। পরে মে-জুন মাসে ৫৯ হাজার ২২৮ টাকা এবং জুন-জুলাইতে আরও ৬৭ হাজার ৪২৯ টাকার তেল কেনার দাবি করা হয়।
তবে বাস্তবে এই তথ্যের সঙ্গে পাম্পের হিসাবের মিল নেই। রূপসী বাংলা অয়েল ব্যাংক পাম্প কর্তৃপক্ষ জানায়, মার্চ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত প্রশাসনের গাড়িতে মাত্র ৩১ হাজার ৫৫৩ টাকার তেল দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্বের বকেয়া হিসেবে সাবেক চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকারের ৬৭ হাজার ৪২৯ টাকার বিল পরিশোধ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
পাম্প ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম হক জানান, “চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৫৫৩ টাকার তেল দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত যেসব ভাউচার দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”
গাড়িচালক রমজান আলী বলেন, “আমি শুধু গাড়িতে তেল নেই, ভাউচার তৈরি করা আমার দায়িত্ব নয়। প্রশাসক স্যারই ১ লাখ টাকার বেশি ভাউচার করেছেন। আমি শুধু সেগুলো জমা দিয়েছি।” উপজেলা প্রশাসনের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেবা খাতুন বলেন, “আমি শুধু নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি, বিল তৈরি বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।”
এই বিষয়ে ইউএনও খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, “আগের চেয়ারম্যান লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তখন কেউ কিছু বলেনি।” এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, “অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রিলাক্স মিডিয়া/ঠাকুরগাঁও
Comments: