দেশের অন্যতম অনলাইন ফ্লাইট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বছরের পর বছর ধরে ফ্লাইট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন ও ট্যুর প্যাকেজ সেবার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জনকারী ফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎই উধাও! প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও সামাজিক মাধ্যম বন্ধ, এবং অফিসেও নেই কোনো কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও এজেন্সিগুলোর অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রি।
শনিবার (২ আগস্ট) সকাল থেকে ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইট বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও শেষ পোস্টটি ছিল ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘিরে। এর আগে কোনো অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পায়নি, তবে রাতারাতি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।
কোম্পানির সেলস ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, “শুক্রবার রাতেই আমাদের মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।”
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা জিডিতে বলা হয়, প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েমসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তা সপরিবারে দেশ ছাড়েন।
২০১৭ সালে ঢাকায় লঞ্চ ইভেন্টের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। দ্রুত সময়েই তারা দেশি-বিদেশি নানা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট টিকিট, হোটেল বুকিং, ভিসা প্রসেসিং ও ট্যুর প্যাকেজসহ বিভিন্ন সেবা চালু করে। বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যে বিমান টিকিট ও ব্যবহারবান্ধব ওয়েবসাইটের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকে Holiday Travelers of Bangladesh গ্রুপে বহু এজেন্সি ও ভুক্তভোগী গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই টিকিট কনফার্মেশন না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এই ঘটনায় বাংলাদেশের ট্রাভেল ও অনলাইন বুকিং ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না এলেও ভুক্তভোগীরা প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। এটি শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের ভরাডুবি নয়—সার্বিকভাবে গ্রাহক আস্থা ও ডিজিটাল সেবার নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: