ভাইয়ের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া চাকরি যেন সুমির জীবনে এক চলমান বেদনার গল্প। শহীদ আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেলেও, তা তার কাছে নয় সম্মানের, বরং এক বেদনার প্রতীক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে একটি সহকারী পদে চাকরি পেয়েছেন। তবে এই চাকরি তার কাছে আনন্দ বা গর্বের বিষয় নয়। তিনি একে দেখছেন ভাই হারানোর বিনিময়ে পাওয়া এক করুণ বাস্তবতা হিসেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার চাকরির পাশাপাশি একটি আবাসিক কোয়ার্টারের ব্যবস্থাও করেছে। সেখানেই বসে Relaks News 24-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুমি বলেন,
“এই চাকরিটা আমার কাছে বেদনাদায়ক। সবচেয়ে খারাপ লাগে তখনই, যখন ভাবি ভাইয়ের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমি একটা চাকরি করছি…”
সুমি আরও বলেন, “কিন্তু কী করবো? জীবন তো থেমে থাকে না। চলার জন্যই নিতে হয়েছে।” পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ভাইকে হারিয়ে জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন সুমি ও তার পরিবার। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে চাকরির ব্যবস্থা করেছে, তবুও তা সুমির মনের শূন্যতা ও বেদনা পূরণ করতে পারেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, “সুমির ভাই শহীদ আবু সাঈদ একজন সাহসী তরুণ ছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ আমরা কখনো ভুলবো না। তাই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এই পদক্ষেপ।”
ভাইয়ের মৃত্যুর শোক আর নতুন জীবনের দায়বদ্ধতার মধ্যে দাঁড়িয়ে সুমির জীবন যেন এক নিঃশব্দ প্রতিরোধের গল্প। চাকরি পেয়েছেন, কিন্তু হৃদয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন ভাই হারানোর গভীর বেদনা। এই বাস্তবতা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের করণীয় নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
মো: সাকিব এনামুল, রংপুর প্রতিনিধি
Comments: