সিলেট নগরীতে আজ শনিবার (২৭ আগস্ট) বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা। ৮ দফা দাবির বাস্তবায়নের জন্য তারা মিছিলের মাধ্যমে আন্দোলন চালাবেন। সংগঠন জানাচ্ছে, এই কর্মসূচি কেন্দ্রীয় আন্দোলনের অংশ, যা রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত করছে।
সিলেটের আম্বরখানাস্থ সংগঠনের কার্যালয় থেকে আজ সকাল থেকে মিছিল শুরু হবে। শ্রমিকরা তাদের ৮ দফা দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন করছেন, যার মধ্যে রয়েছে—
সিটি কর্পোরেশনের হাতে নিয়ন্ত্রণ দেওয়া অধ্যাদেশ ৪৫/২০২৫ বাতিল করা।
নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিটের দায়িত্ব বিআরটিএ’র অধীনে রাখা।
দেশীয় কারখানায় তৈরি যান নতুন ডিজাইনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দুই বছরের পরিকল্পনা।
কোনো সিন্ডিকেট বা নির্দিষ্ট কোম্পানিকে অগ্রাধিকার না দেওয়া।
স্থানীয় উৎপাদকদের সুযোগ সৃষ্টি।
পরিবেশবান্ধব ব্যাটারি ব্যবহারে ভর্তুকি ও লিথিয়াম ব্যাটারির প্রসার ও সোয়াপিং বুথ স্থাপন।
স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন নির্মাণ।
আটক যান দ্রুত মুক্তি ও রেকার বিল কমানো।
সংগঠন জানাচ্ছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সারাদেশের প্রায় ৬০ লক্ষ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য নিবন্ধন, লাইসেন্স, রুট পারমিট ও প্রশিক্ষণের অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালানো হচ্ছে।
সুপ্রীম কোর্টের ২০২২ সালের আদেশে মহাসড়ক ছাড়া সব সড়কে এসব যানবাহনের চলাচল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২৪ সালে ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেও শ্রমিক আন্দোলনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
শ্রমিকদের অভিযোগ, বিআরটিএ ‘বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫’ প্রণয়ন প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, কিন্তু গত ২৮ আগস্ট আইন মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন সংশোধন করে ৪৫ নং অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করেছে। এতে ব্যাটারিচালিত রিকশার নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ সিটি কর্পোরেশনের হাতে চলে যাবে।
সংগ্রাম পরিষদের দাবি, সিটি কর্পোরেশনের পর্যাপ্ত জনবল বা কারিগরি দক্ষতা নেই, বরং কিছু সরকারঘনিষ্ঠ কোম্পানিকে বাজার দখলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রায় ৬০ লক্ষ যানবাহন বাতিল হওয়ার ঝুঁকি এবং চালকেরা নির্দিষ্ট কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের এই শোডাউন সিলেটের যানজট ও নগর জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। শ্রমিকরা তাদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য আন্দোলন চালাতে বদ্ধপরিকর, আর এই আন্দোলন সরকারের স্থানীয় নীতিমালার পুনর্বিবেচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: