০৩ অক্টোবর ২০২৫ | ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলাদেশ
দগ্ধ শরীরে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা, না ফেরার দেশে সেই শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী

image

শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিলেন মাহরিন চৌধুরী। উত্তরার বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কো-অর্ডিনেটর। বিমান বিধ্বস্তের আগুনে দগ্ধ হয়েও শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে নিজে পুড়ে যান মাহরিন চৌধুরী। শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি থাকা এই সাহসী শিক্ষিকা শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন।

ঢাকার উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কো-অর্ডিনেটর মাহরিন চৌধুরী (৪২) শিক্ষার্থীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আগুন ছড়িয়ে পড়লেও তিনি বের হননি, বরং যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বাইরে পাঠিয়ে দেন। এতে তার শরীর সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়।

সোমবার (২১ জুলাই) রাতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান। মাহরিনের ভাই মুনাফ মুজিব চৌধুরী ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাসে জানান, “মাহরিন আপু আর আমাদের মাঝে নেই।”

ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে, যখন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। দায়িত্বশীল মাহরিন চৌধুরী প্রতিদিনের মতোই শিক্ষার্থীদের গেট পার করাতে ব্যস্ত ছিলেন।

ঘটনার পর তিনি নিজে নিরাপদে বের না হয়ে শিশুদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাঁর এই আত্মত্যাগকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। চিকিৎসকদের ভাষ্যে, তার শরীরের শতভাগই দগ্ধ ছিল এবং তিনি আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সে লড়াইয়ে হার মানেন মাহরিন।

মাহরিন চৌধুরীর মৃত্যু শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি গোটা জাতির জন্য এক অপূরণীয় শোক। একজন শিক্ষক কেমনভাবে দায়িত্ববোধ ও মানবিকতার সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন, তার বাস্তব উদাহরণ তিনি হয়ে থাকবেন। তার দুই সন্তানকে রেখে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি। জাতি হারাল এক সত্যিকারের নায়িকা।










অনলাইন ডেস্ক

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading