ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় তিন স্তরের চক্র সক্রিয়; চলছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক জড়িত লুটপাট চক্রে দেড় শতাধিক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে গ্রেফতার, পাথর উদ্ধার ও তদন্ত কার্যক্রম চলছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে জড়িত তিন স্তরের চক্র সক্রিয় ছিল বলে জানা গেছে। শ্রমিক ও দিনমজুর থেকে শুরু করে নদীপাড়ের ব্যবসায়ী এবং সর্বশেষ ক্রাশার মেশিন মালিকরা এ লুটের মূল অংশীদার। হাতবদলের মাধ্যমে এই পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছায়।
রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পরিচালিত এ লুটপাটে দেড় শতাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান আলমগীর আলমসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শ্রমিকরা নৌকা বা বর্গফুট হিসেবে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে বোল্ডার বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে ক্রাশার মালিকরা সেই পাথর ১১০ থেকে ১৬০ টাকা দামে বিক্রি করতেন। এ প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের অগ্রিম টাকা বা দাদন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জাফলং থেকে ১১ হাজার ঘনফুটেরও বেশি সাদাপাথর উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে অন্তত ছয়জনকে। রাঙপানি পর্যটন কেন্দ্রে এখনো লুট চলমান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এদিকে ভোলাগঞ্জের পাথর ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন ও আবদুল ওয়াহিদের বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র, ভারতীয় মদ ও এয়ারগান উদ্ধার করে চারজনকে গ্রেফতার করেছে টাস্কফোর্স।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বৃদ্ধি করেছে। উচ্চ আদালতও লুটপাটকারীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তবে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরই পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে।
ভোলাগঞ্জসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় সাদাপাথর লুটপাট দমনে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রভাব ও স্থানীয় যোগসাজশের কারণে লুটের ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। এখন দেখার বিষয়—আদালতের নির্দেশনার পর কতটা কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: