০২ অক্টোবর ২০২৫ | ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলাদেশ
জামালপুরে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ

image

জামালপুরের বকশীগঞ্জে ব্রাইট স্কুলের পরিচালক ইসমাইল হোসেন সিরাজী-এর বিরুদ্ধে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই কাজ করায় নৈতিকতা ও শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ এবং দেশের শিশু অধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। শিশুদের অধিকারের মধ্যে রয়েছে তাদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাওয়া।

ব্রাইট স্কুলটি বন্ধের মূল কারণ হলো একাডেমিক নীতিমালা লঙ্ঘন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিকটবর্তী অন্য একটি স্কুল থেকে ন্যূনতম দুই কিলোমিটার দূরে স্থাপন করতে হয়। কিন্তু ব্রাইট স্কুলটি নগর মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাত্র ১৫০ গজের মধ্যে অবস্থিত, যা এই নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলটিকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের এই নির্দেশের প্রতিবাদে ব্রাইট স্কুলের পরিচালক ইসমাইল হোসেন সিরাজী শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মানববন্ধন করিয়েছেন। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, কারণ শিশুরা রাজনীতি বা জটিল সামাজিক প্রতিবাদের অর্থ বোঝে না। তাদের এমন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হলে তা তাদের ভবিষ্যৎ মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এ বিষয়ে নগর মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ সিদ্দিকী বলেন, "শিক্ষার্থীরা মনে করছে ব্রাইট স্কুল বন্ধ হওয়ায় তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। কিন্তু ব্রাইট স্কুলের রেজিস্ট্রেশন করার কোনো ক্ষমতাই নেই। পরিচালক টাকার বিনিময়ে অন্যান্য স্কুলের সঙ্গে চুক্তি করে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। ফলে, তাদের পড়াশোনার কোনো ক্ষতি হবে না; তারা যে স্কুলে নিবন্ধিত, সেখানেই পড়াশোনা করতে পারবে।" প্রধান শিক্ষক আরও প্রশ্ন তোলেন, যার রেজিস্ট্রেশন করার এখতিয়ার নেই, তিনি কীভাবে একটি স্কুল চালাচ্ছেন? এটি কেবল শিক্ষার্থীদের নয়, বরং পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে প্রতারণা।

বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোতালেব সরকার বলেন,সকলের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। প্রশাসনের সিধান্ত না মেনে এভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করানো ঠিক হয়নি। এই বিষয়ে ব্রাইট স্কুলের পরিচালক ইসমাইল হোসেন সিরাজীর সঙ্গে বার বার মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা বলেন, একাডেমিক নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে ব্রাইট স্কুলটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু সাংবাদিক আমার বক্তব্য না নিয়ে মনগড়া তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা দুঃখজনক। আমি সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এমন অসত্য সংবাদ পরিবেশনকারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সাংবাদিকতার নৈতিকতা মেনে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা জরুরি। ব্রাইট স্কুলের পরিচালকের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সমাজে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসন যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয় এবং আইন লঙ্ঘনকারী সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।














রিলাক্স মিডিয়া/এম আর সাইফুল

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading