লন্ডনের মেয়র স্যার সাদিক খানের সংসদে ফেরার পথ কঠিন হয়ে গেল। অ্যাঞ্জেলা রেনারের কৌশলগত বিল লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
লন্ডনের মেয়র স্যার সাদিক খান সংসদে ফিরে আসার সম্ভাবনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। লেবার পার্টির উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনার সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেছেন, যাতে বলা হয়েছে, কোনো মেয়র একইসাথে সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে সাদিক খানের জন্য লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ফেরার পথ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। আগামী নির্বাচনের আগে কমন্স আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগও তার জন্য অনেকটাই সীমিত হয়ে যাবে। রেনারের বিভাগ জানিয়েছে, নতুন আইনটি তৈরি করা হয়েছে মূলত মেয়রদের যেন নিজেদের শহরের জনগণের সেবায় মনোনিবেশ করতে বাধ্য করা যায়। তবে সমালোচকরা মনে করছেন, এটি মূলত লেবারের ভেতরকার নেতৃত্ব প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রভাব কমানোর একটি কৌশল।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একসময় লন্ডনের মেয়র ও এমপি উভয় পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অনেকের মতে, সাদিক খানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও সেই পথেই এগোচ্ছিল। তবে রেনারের আনা নতুন আইনের ফলে সাদিকের জন্য সেই পথ এখন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন আইনটি ১৯৯৯ সালের গ্রেটার লন্ডন অথরিটি অ্যাক্ট-এর কিছু অংশ পুনর্লিখন করবে, যেখানে বলা হবে: “যদি একজন ব্যক্তি যুক্তরাজ্যের আইনসভার নির্বাচিত সদস্য হন তবে তিনি মেয়র হতে অযোগ্য হবেন।” লেবারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। একজন টোরি কৌশলবিদ ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে বলেন, “আবারও অ্যাঞ্জেলা রেনার সম্ভাব্য নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর আঘাত হানার কৌশল ব্যবহার করছেন। তার উচিত ব্রিটেনের জন্য কাজ করা, ছোট দলের রাজনীতি নয়।” সাদিক খান বর্তমানে লন্ডনের মেয়র হিসেবে তার তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৬ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং থেকে লেবার এমপি ছিলেন। যদিও তিনি সবসময় লেবার নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা অস্বীকার করে এসেছেন, তবে তাকে ঘিরে জল্পনা-কল্পনা কখনোই থামেনি।
অ্যাঞ্জেলা রেনারের নতুন আইন শুধু লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের সংসদে ফেরার পথ বন্ধ করেনি, বরং লেবার পার্টির ভেতরে নেতৃত্বের লড়াইকে নতুন করে উসকে দিয়েছে। এখন রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি থাকবে, এই আইনের বাস্তবায়ন কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সাদিকের ভবিষ্যৎ ও লেবারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: