সিলেটে পাথর লুটে রাজনৈতিক সিন্ডিকেট। বিএনপি-আ.লীগ-জামায়াতের সক্রিয় অংশগ্রহণে শাহ আরেফিন টিলা থেকে শতকোটি টাকার সাদাপাথর লুট।
সিলেটের ঐতিহাসিক শাহ আরেফিন টিলা আজ ধ্বংসস্তূপ। এক সময় ৭০০ বছরের পুরনো মাজার দাঁড়িয়ে থাকা এ টিলাটি এখন জায়গায় জায়গায় গর্তে ভরা। আইন থাকা সত্ত্বেও ১৯৯৯ সালে সরকারিভাবে ইজারা দেয়ার পর শুরু হয় অবৈধ পাথর উত্তোলন। মামলা-মোকদ্দমায় বন্ধ থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আবারও শুরু হয় নির্বিচার লুট।
গত এক বছরে শতকোটি টাকার সাদাপাথর লুট হয়ে গেছে এ এলাকা থেকে। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা সমন্বিতভাবে এ লুটপাটের সঙ্গে জড়িত।
যুবদল নেতা বাবুল আহমদ বাবুল, ইসলমাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেবুল আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হুঁশিয়ার আলী, স্থানীয় জামায়াত কর্মী ইয়াকুব আলীসহ অন্তত ২০ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট টিলাটি ধ্বংস করেছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় এই লুট অব্যাহত ছিল। এমনকি পুলিশের বিরুদ্ধেই পাথরবাহী ট্রাক ও ট্রাক্টর থেকে চাঁদাবাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তালিকায় আরও আছেন জেলা যুবদল, উপজেলা বিএনপি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। তাদের অনেকেই পলাতক। পরিবেশবাদীরা প্রতিবাদ করলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, পাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এক বছর ধরে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। এখনো উদ্ধার করা গেছে মাত্র পাঁচ লাখ ঘনফুট পাথর, যেখানে এক বছরে লুট হয়েছে প্রায় তিন কোটি ঘনফুট।
সিলেটের শাহ আরেফিন টিলা ধ্বংসের ঘটনায় রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের জড়িত থাকার প্রমাণ প্রকাশ্যে এসেছে। তবে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে সাদাপাথর রক্ষার লড়াই ব্যর্থ হচ্ছে। এখন প্রশ্ন থেকে যায়—পাথর লুটপাটে জড়িতদের বিচার কি হবে, নাকি এই সিন্ডিকেট অদম্যই থেকে যাবে?
অনলাইন ডেস্ক
Comments: