যুক্তরাজ্য জুড়ে জিসিএসই (GCSE) পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ বছর সামগ্রিকভাবে পাসের হার কমলেও লন্ডনের শিক্ষার্থীরা আবারও শীর্ষে অবস্থান ধরে রেখেছে। ইংরেজি ও গণিতে জিসিএসই পাসের হার রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে গেছে। তবে শীর্ষ গ্রেড অর্জনে লন্ডনের শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে এ বছরের জিসিএসই (General Certificate of Secondary Education) ফলাফলে পাসের হার আবারও কমেছে। বিশেষ করে ইংরেজি ও গণিতে এ ফলাফল গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গণিতে মাত্র ৫৮.৩% শিক্ষার্থী পাস করেছে, যা গত বছরের ৫৯.৫% থেকে কমে ২০১৩ সালের পর সর্বনিম্ন। ইংরেজিতে পাসের হার ১.৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬০.২% এ, যা ২০০৪ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। তবে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষ গ্রেড অর্জনের হার সামান্য বেড়েছে। এ বছর ২১.৯% শিক্ষার্থী শীর্ষ গ্রেড অর্জন করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ০.১% বেশি এবং মহামারীর আগের বছর ২০১৯ সালের ২০.৮% থেকেও উন্নত।
শিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা JCQ-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লন্ডনের শিক্ষার্থীরা এবারও সেরা ফলাফল ধরে রেখেছে। লন্ডনে ২৮.৪% শিক্ষার্থী ৭ বা এ গ্রেড পেয়েছে, যা দেশের অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে এগিয়ে। সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স দেখা গেছে উত্তর-পূর্বে, যেখানে এ হার মাত্র ১৭.৮%। তবে তুলনামূলকভাবে লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে বছরের পর বছর ধরে পাসের হারে পতন বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বছর লন্ডনে ৭১.৬% শিক্ষার্থী অন্তত ৪ বা সি গ্রেড অর্জন করেছে, যা গত বছরের ৭২.৫% থেকে কিছুটা কম। দক্ষিণ-পূর্বে এ হার ৭০.৪% থেকে ৭০% এ নেমে এসেছে। মেয়েদের ফলাফল এবারও ছেলেদের তুলনায় ভালো। প্রায় ২৪.৫% মেয়ে শিক্ষার্থী ৭/এ গ্রেড অর্জন করেছে, যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে এ হার ১৯.৪%। এ ব্যবধান ৫.১ শতাংশ পয়েন্ট, যা ২০০০ সালের পর সবচেয়ে সংকীর্ণ। শিক্ষা সচিব ব্রিজেট ফিলিপসন বলেন, মহামারীকালীন ব্যাঘাত সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা অসাধারণ স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে। অপরদিকে, ইংল্যান্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকুয়ালের প্রধান স্যার ইয়ান বাউকহ্যাম জানান, এই বছরের ফলাফল “স্থিতিশীল” এবং গত বছরের সঙ্গে তুলনায় বড় কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
যুক্তরাজ্যে জিসিএসই পরীক্ষার সামগ্রিক ফলাফল নিম্নগামী হলেও লন্ডন আবারও দেশের শিক্ষার মানদণ্ডে সেরা প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা শিক্ষা ব্যবস্থার আঞ্চলিক বৈষম্যকেই তুলে ধরছে, যা ভবিষ্যতে নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: