লন্ডনে ছিনতাইয়ের ২০টি ঘটনায় মাত্র ১টি সমাধান, উদ্বেগজনক অপরাধ বৃদ্ধির চিত্র। ছুরি হামলা ও মোবাইল চুরির ঘটনা বাড়লেও সমাধানের হার আশঙ্কাজনকভাবে কম।
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ছিনতাই ও ছুরি-সংক্রান্ত অপরাধের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পলিসি এক্সচেঞ্জ নামক থিঙ্ক ট্যাঙ্কের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, গত বছর লন্ডনে ছিনতাইয়ের প্রতি ২০টি ঘটনায় মাত্র একটি সমাধান করতে পেরেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
গবেষণায় বলা হয়, শুধুমাত্র রাস্তায় চুরি হওয়া ঘড়ি বা ফোনের মতো ১৭০টি ছিনতাইয়ের মধ্যে মাত্র একটি ঘটনার তদন্ত সফল হয়েছে। পাশাপাশি, গত তিন বছরে ছুরি-সম্পর্কিত অপরাধ প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বেশিরভাগই পশ্চিম লন্ডনের পর্যটকসমৃদ্ধ এলাকায় ঘটেছে।
টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিড-পরবর্তী সময়ে সহিংস ডাকাতি ও স্মার্টফোন ছিনতাই ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডের মাত্র ৪ শতাংশ এলাকা রাজধানীর অর্ধেক অপরাধের জন্য দায়ী। এর মধ্যে অক্সফোর্ড সার্কাস, রিজেন্ট স্ট্রিটসহ ২০টি রাস্তার ছোট একটি অংশে রাজধানীর অন্য অংশের তুলনায় ছুরি হামলার হার বেশি।
২০২৪ সালে ব্যক্তিগত চুরির মাত্র ০.৬ শতাংশ ঘটনার সমাধান হয়েছে, যেখানে ২০২১ সালে এই হার ছিল ১.১ শতাংশ। ডাকাতির ক্ষেত্রে, ২০২৪ সালে সমাধানের হার ৫.১ শতাংশ, যা ২০২২ সালের তুলনায় অনেক কম।
পুলিশের "স্টপ অ্যান্ড সার্চ" কৌশল নিয়ে বিতর্ক থাকলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে, এটি বর্ণবাদ নয় বরং অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী গৃহীত কার্যকরী পদক্ষেপ। খুন, ছুরি হামলা ও ডাকাতির মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গদের অনুপাত বেশি, যদিও তাদের সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে কম।
মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা ডেভিড স্পেন্সার বলেন, অপরাধ সমাধানের নিম্নহার জনগণের মধ্যে আস্থা হারানোর কারণ হচ্ছে।
২০১৭ সালে যেখানে ৭১ শতাংশ ডাকাতকে তাৎক্ষণিক কারাদণ্ড দেওয়া হতো, ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশে। সহিংস অপরাধে সাজা পাওয়ার হারও কমেছে—৪৩ শতাংশ থেকে ৩৬ শতাংশে।
লন্ডনে অপরাধের হার বাড়লেও তার সমাধান হারের নিম্নগতি জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ন্যায়বিচারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও বিচার বিভাগের কার্যকারিতা বাড়ানো জরুরি।
পলিসি এক্সচেঞ্জের রিপোর্টে সরকারকে "জিরো টলারেন্স" নীতির আওতায় হটস্পট এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত টহল, লাইভ ফেস রিকগনিশন সিস্টেম এবং বাধ্যতামূলক হেফাজতের আইন প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: