গ্রুমিং গ্যাং ইস্যুতে মন্তব্য নিয়ে বিতর্কে লন্ডন মেয়র স্যার সাদিক খান। অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা ও ভুক্তভোগীদের পক্ষের কর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন— তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে উপহাস করেছেন।
লন্ডনে শিশুদের যৌন নির্যাতনকারী গ্রুমিং গ্যাং ইস্যুতে সিটি প্রশাসন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মেয়র সাদিক খান এ সংবেদনশীল বিষয়টিকে তুচ্ছ করে দেখেছেন এবং প্রকৃত সমস্যার দিকে নজর না দিয়ে “শব্দার্থের” বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
লন্ডনে শিশু যৌন নির্যাতনকারী গ্রুমিং গ্যাং দমন না করার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন মেয়র স্যার সাদিক খান। অবসরপ্রাপ্ত মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা জন ওয়েজার বলেন, রাজধানীর এই গুরুতর সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাদিক খান “অর্থবোধকভাবে উপহাস” করেছেন।
এই বছরের শুরুতে গ্রুমিং গ্যাং নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র জানান, লন্ডনের মূল সমস্যা হলো “কাউন্টি লাইনের” মাদক ব্যবসা, যেখানে তরুণদের ব্যবহার করা হচ্ছে। লন্ডন অ্যাসেম্বলির কনজারভেটিভ পার্টির নেতা সুসান হল তাঁকে যখন চাপ দেন, তখন সাদিক খান “গ্রুমিং গ্যাং” শব্দের অর্থ জানেন না বলে দাবি করেন।
জন ওয়েজার বলেন, “সাদিক খান শব্দার্থবিদ্যায় আটকে আছেন, অথচ প্রকৃত সমস্যাটি হলো— বিপন্ন শিশুদের নির্যাতন।” তিনি আরও জানান, এই সমস্যাটি বহুদিনের, এমনকি ২০০৬ সালেও তাঁকে ৫০টি শিশু যৌন নির্যাতনের মামলা তদন্ত বন্ধ করতে বলা হয়েছিল, যদিও অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছিল।
মেয়রের মুখপাত্র জানান, “শিশুদের যৌন শোষণকারী যেকোনো ব্যক্তি বা দল সম্পূর্ণরূপে ঘৃণ্য। সাদিক খান স্পষ্টভাবে বলেছেন— তাদের আইনের পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
এদিকে, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার স্যার মার্ক রাউলি নিশ্চিত করেছেন, লন্ডনে শিশু শোষণের প্রায় ৯,০০০টি পুরোনো মামলা পুনর্বিবেচনা করা হবে। এই তদন্তের লক্ষ্য হচ্ছে গত ১৫ বছরে উপেক্ষিত বা অসম্পূর্ণ থাকা যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা।
রচডেল নির্যাতন কেলেঙ্কারি উন্মোচনকারী ম্যাগি অলিভার বলেছেন, “লন্ডনই এখন ধর্ষণ গ্যাং ঢেকে রাখার শেষ ঘাঁটি।” শ্যাডো স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস ফিলপও অভিযোগ করেন, “সাদিক খান ও লেবার পার্টি এই কেলেঙ্কারি গোপন রাখতে সহায়তা করছে।”
লন্ডনে শিশু যৌন নির্যাতন ও গ্রুমিং গ্যাং ইস্যু নতুন করে জনমনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। মেয়র সাদিক খান বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিলেও, সমালোচকদের দাবি— প্রশাসনের গাফিলতিই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মূল কারণ। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়া হয়তো এই জটিল ইস্যুতে নতুন আলোর দিশা আনবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: