১১ নভেম্বর ২০২৫ | ২৭ কার্তিক ১৪৩২
ব্রিটেন
ব্রিটেনে চলন্ত ট্রেনে ছুরি হামলা: ১৪ মিনিটের আতঙ্কে কেঁপে উঠল যাত্রীরা, আহত ১১ জন

image

ইংল্যান্ডের পিটারবোরো থেকে লন্ডনের পথে যাত্রা করা একটি ট্রেনে ছুরি হামলার ঘটনায় ১১ জন আহত হয়েছেন। মাত্র ১৪ মিনিটের মধ্যে ট্রেনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক, যা প্রত্যক্ষদর্শীরা তুলনা করেছেন "একটি ভয়াবহ সিনেমার দৃশ্যের" সঙ্গে।

LNER ট্রেনের ভেতরে ঘটে ব্রিটেনের অন্যতম ভয়াবহ গণ ছুরিকাঘাতের ঘটনা—যাত্রীরা বগির ভেতরে আটকা পড়ে বাঁচার মরিয়া চেষ্টা চালান।

সোমবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ট্রেনটি পিটারবোরো স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্যানয় থেকে ঘোষণা আসে,

“আমরা জানি যে একটি ঘটনা ঘটেছে… শুধু নিজেদের নিরাপদ রাখুন।”

এরপরই ট্রেনে শুরু হয় ছুরি হামলা। এক হামলাকারী যাত্রীদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালাতে থাকে। কেউ কেউ টয়লেটে আশ্রয় নেন, কেউ আসনের নিচে লুকানোর চেষ্টা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায়—“এটা ছিল যেন কোনো হরর সিনেমার মতো দৃশ্য।”

হামলাকারী একটি বড় রান্নাঘরের ছুরি নিয়ে যাত্রীদের উপর আক্রমণ চালায়। ১৪ মিনিট ধরে চলা তাণ্ডবে ১১ জন আহত হন, দুইজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ট্রেনটি পরিকল্পিতভাবে পরবর্তী স্টপেজ হান্টিংডন স্টেশনে ১৪ মিনিট পর থামে, যেখানে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করে।

প্রত্যক্ষদর্শী অলি ফস্টার বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হ্যালোইন প্র্যাঙ্ক, কিন্তু তারপর চারপাশে রক্ত দেখেই বুঝতে পারি আসলেই ভয়ঙ্কর কিছু ঘটছে।”

আরেক যাত্রী স্টিভ জানান, “আমরা জানতাম না কী হচ্ছে। সবাই আতঙ্কে চিৎকার করছিল। এক মেয়ের কোটে রক্ত লেগে গিয়েছিল, শিশুরা কাঁদছিল। মনে হচ্ছিল, আমরা একটা বন্ধ বাক্সে বন্দি হয়ে গেছি।”

হামলার সময় ট্রেনটি ১২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলছিল। তবে সিগন্যালম্যান ও ক্রুদের দ্রুত সিদ্ধান্তের কারণে ট্রেনটি ধীরগতিতে এনে হান্টিংডনে থামানো সম্ভব হয়।

হান্টিংডনের কনজারভেটিভ এমপি বেন ওবেস-জেক্টি বলেন, “এত বড় পুলিশ ও জরুরি সেবার প্রতিক্রিয়া আমি আগে কখনও দেখিনি।”

প্রথম জরুরি কল আসে সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে, এবং ৭টা ৫১ মিনিটের মধ্যে পুলিশ ট্রেনে উঠে সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করে।

প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি জানান, তিনি একই ট্রেন সার্ভিসে কয়েক ঘণ্টা আগেই ভ্রমণ করেছিলেন এবং ঘটনাটি “চমকে দেওয়ার মতো” বলে অভিহিত করেন।

ব্রিটেনের এই ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দেশজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এ ঘটনা। পুলিশ বলছে, হামলার পেছনের উদ্দেশ্য ও হামলাকারীর মানসিক অবস্থা নিয়ে তদন্ত চলছে।










অনলাইন ডেস্ক

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading