আশুলিয়ায় নাসা গ্রুপের ১৬টি তৈরি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তে ২৭ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৫ জন।
শেষ পর্যন্ত আশুলিয়ায় নাসা গ্রুপের ১৬টি তৈরি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর এ সিদ্ধান্তে প্রায় ২৭ হাজার শ্রমিক চাকরিহারা হয়েছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আগস্ট মাসের বেতনসহ যাবতীয় পাওনা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। আকস্মিক এ সিদ্ধান্তে দিশাহারা হয়ে তাঁরা বুধবার সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তাঁরা সাড়া না দিলে জলকামান ও লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। এ সময় অন্তত ১৫ জন আহত হন, যার মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ আগস্ট মাসের বেতন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে, সেপ্টেম্বর মাসের বেতন ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এবং অন্যান্য পাওনা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও এর আগেই স্থায়ীভাবে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ-গ্যাসসংকট এবং নতুন ক্রয়াদেশ না থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে দফায় দফায় কারখানাগুলো অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এদিকে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই কারখানার কার্যক্রমে অস্থিরতা শুরু হয়। বেতন-ভাতা অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং শ্রমিকরা বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বর্তমানে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পুরো শিল্পাঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাসা গ্রুপের ১৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ায় দেশের তৈরি পোশাক খাতে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। বেকার হওয়া ২৭ হাজার শ্রমিকের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা দ্রুত পাওনা পরিশোধ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছেন। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: