যুক্তরাজ্যে কেয়ার ভিসায় আসা ১.৫ লাখেরও বেশি অভিবাসীর খোঁজ নেই — সরকারের স্বীকারোক্তি। ব্রিটেনের সামাজিক সেবা খাতে নিয়োগ পাওয়া এসব বিদেশি কর্মীদের অনেকের অবস্থান ও কর্মসংস্থানের তথ্য অজানা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন যে কেয়ার ভিসায় দেশে আসা অন্তত ১,৫০,০০০ অভিবাসীর খোঁজ তারা হারিয়েছেন। ব্রিটেনের সংকটাপন্ন সামাজিক সেবা খাতের শূন্যস্থান পূরণে বিদেশি কর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বর্তমানে কতজন যুক্তরাজ্যে রয়েছেন বা এই খাতে কর্মরত আছেন — এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা’ প্রকল্পে কেয়ার কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে ‘হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ভিসা’ নিয়ে ব্রিটেনে আসা অভিবাসীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১,৫৪,৪০২ জনে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ১,০৭,৭৭২ জন যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন। তবে ২০২৪ সালে এই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৯,৫৩৯ জনে, যখন টোরি সরকার কেয়ার ভিসাধারীদের পরিবারের সদস্যদের আনা নিষিদ্ধ করে।
কেয়ার মন্ত্রী স্টিফেন কিনক পার্লামেন্টে জানান, কিছু অভিবাসী অন্য ভিসা রুটে চলে যেতে পারেন অথবা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে সরকারের কাছে এমন কোনো তথ্যভাণ্ডার নেই যা ভিসার স্থিতি ও চলমান কর্মসংস্থানের সরাসরি সংযোগ দেখায়।
২০২৪ সালে লেবার সরকার কেয়ার ভিসা রুট পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, ফলে কেয়ার হোমগুলো বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে পারছে না। এখন স্থানীয় ব্রিটিশ বা যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিদেশিদের নিয়োগের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা ইতিমধ্যেই কেয়ার ভিসায় যুক্তরাজ্যে কর্মরত, তারা মেয়াদ বাড়াতে পারবেন।
ছায়া স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস ফিলপ লেবার সরকারের সমালোচনা করে বলেন, "সরকারের এই অজ্ঞতা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার প্রমাণ। অভিবাসন কমাতে হলে সংসদ নির্ধারিত বার্ষিক ভিসা সীমা কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।"
স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের সময় এই পথ খোলা হয়েছিল এবং বিদ্যমান তথ্যব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি ছিল না। নতুন পরিকল্পনায় ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরানোর হার ১১% বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রিটেনে সামাজিক সেবা খাতে বিদেশি কর্মীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেয়ার ভিসায় আসা অভিবাসীদের অবস্থান অজানা থাকা নীতিগত ও প্রশাসনিক দুর্বলতার বড় উদাহরণ হয়ে উঠেছে। নতুন সরকার অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন এনে স্থানীয় শ্রমশক্তির উপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: