০১ নভেম্বর ২০২৫ | ১৭ কার্তিক ১৪৩২
বাংলাদেশ
টাকা না নিলে মনে করে কাজ হবে না: ভূমি কর্মকর্তার স্বীকারোক্তি

image

ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল হয়ে শাস্তিমূলক বদলির পরও বদলায়নি তার স্বভাব। নতুন কর্মস্থলেও অব্যাহত রয়েছে দুর্নীতি, ঘুষ আদায় ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার। এবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর-রায়পুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে উঠেছে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ।

ঘুষ ছাড়া হয় না কোনো কাজ

স্থানীয়দের অভিযোগ, জমির খারিজসহ যেকোনো সেবা পেতে হলে এই অফিসে টাকা দিতেই হবে, নইলে ফাইল এগোয় না। জমির মালিক আন্না খাওয়া বলেন,
“আমার ৮ শতাংশ জমির খারিজ করতে ৭ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু কাগজপত্রে ভুল হওয়ার পর তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য আবার ৪ হাজার টাকা দাবি করেন তহসিলদার। শেষমেশ আমি বাধ্য হয়ে টাকা দিয়েছি।”

আরেক ভুক্তভোগী জানান, সাড়ে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার পরও দিনের পর দিন ঘোরানোর পর তহসিলদার সাফ জানিয়ে দেন— ৫০০ টাকা না দিলে খারিজের কাগজপত্র হাতে পাওয়া যাবে না।

সরকারি বিদ্যুৎ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার

শুধু ঘুষ নয়, সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভূমি অফিসের বৈদ্যুতিক লাইন থেকে সংযোগ নিয়ে বাইরে রাখা তার ব্যক্তিগত অটোরিকশা চার্জ দেওয়া হচ্ছে।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, “জনগণের টাকায় বিদ্যুতের বিল দিয়ে তিনি নিজের গাড়ি চার্জ দিচ্ছেন— এটা সরাসরি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার।”

নিজ মুখেই দুর্নীতির স্বীকারোক্তি

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল করিম অকপটে বলেন,
“আমি টাকার অঙ্ক বলি না। মানুষ যা খুশি হয়ে দেয়, না নিলে তারা মনে করে কাজ হবে না… জোর করে দিলে আমি ফিরিয়ে দিই না— এটাই সত্য।”

তিনি জানান, মামুন নামে এক সহযোগীর মাধ্যমে বেশিরভাগ খারিজ আবেদন করানো হয় এবং অর্থ লেনদেনও তার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। সরকারি ফি ৭০ টাকা হলেও আবেদনকারীরা ১০০-১৫০ টাকা দেন, যার একটি অংশ মামুন নিজের কাছে রাখেন।

বিপুল সম্পদের মালিকানা অভিযোগ

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে রেজাউল করিম বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঠাকুরগাঁও শহরের সাহাপাড়ায় পাঁচতলা ফাউন্ডেশনের একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন তিনি, যার দোতলার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া শহর ও গ্রামে তার নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন,
“অভিযোগগুলো আমরা পেয়েছি। একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্বের এমন অপব্যবহার করলে তা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করা হবে।










রিলাক্স মিডিয়া/ঠাকুরগাঁও

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading