ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কারাগারে রেকর্ড সংখ্যক বিদেশি যৌন এবং সহিংস অপরাধীর উপস্থিতি সরকারকে চাপের মুখে ফেলেছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের বিচার মন্ত্রণালয় (MoJ) প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এক বছরে বিদেশি জাতীয় যৌন ও সহিংস অপরাধীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। নিরাপত্তা, অভিবাসন নীতি এবং অপরাধ দমন ব্যবস্থা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক।
২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের কারাগারে প্রায় ১,৭৩১ জন বিদেশি যৌন অপরাধী বন্দি রয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৯.৯ শতাংশ বৃদ্ধি। এই বৃদ্ধির হার ব্রিটিশ নাগরিকদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। একই সময়ে বিদেশি সহিংস অপরাধীর সংখ্যা ৮.৮ শতাংশ বেড়ে ৩,২৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।
ব্রিটিশ সহিংস অপরাধীর সংখ্যার বৃদ্ধি যেখানে ৪.৮ শতাংশ, সেখানে বিদেশিদের হার দ্বিগুণ। কারাগারে বর্তমানে ৮৭,০০০ বন্দীর মধ্যে ১২.৩ শতাংশই বিদেশি নাগরিক, যা অন্তত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, মাদক সংক্রান্ত অপরাধে বিদেশিদের উপস্থিতি দ্বিগুণ—সব মাদক মামলার ১৯.৭ শতাংশে বিদেশিদের জড়িত পাওয়া গেছে।
বন্দিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিদেশি গোষ্ঠী হচ্ছে আলবেনীয়রা, এরপর আছে পোলিশ, রোমানিয়ান, আইরিশ, লিথুয়ানিয়ান এবং জ্যামাইকান নাগরিকরা। বিশেষ করে ভারতীয়, ইরানি, আফগান, সুদানী ও সিরিয়ান নাগরিকদের সংখ্যা গত বছর থেকে ১০–৪৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে লন্ডনের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ৪০ শতাংশই বিদেশি বলে দাবি করেন রিফর্ম ইউকে নেতা নাইজেল ফ্যারেজ। এসেক্সের এপিংয়ে এক আশ্রয়প্রার্থীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে ১,০০০ জনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিসংখ্যান প্রকাশের ফলে অভিবাসন নীতি এবং অপরাধ দমনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। টোরি রাজনীতিকেরা সকল বিদেশি অপরাধীর জাতীয়তা ও ভিসা পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক সংসদীয় প্রতিবেদন চেয়েছেন। ছায়া বিচার সচিব রবার্ট জেনরিকের মতে, “তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত এবং ভিসা ও সহায়তা স্থগিত করতে হবে।”
সেন্টার ফর মাইগ্রেশন কন্ট্রোলের মতে, “সাজার মেয়াদ নির্বিশেষে বিদেশি অপরাধীদের নির্বাসিত করা উচিত।” নিরাপত্তা জোরদারে অপরাধমূলক রেকর্ড যাচাই এবং ‘জাতীয়তার লাল তালিকা’ ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: