সিলেট নগরীতে সড়ক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে এক মাসেই হাজারেরও বেশি যানবাহন জব্দ ও বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের পর কিছুদিন অভিযান বন্ধ থাকায় নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। প্রধান সড়কগুলোতে যানজট ও বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকায় নাগরিকরা পুনরায় অভিযানের দাবি জানান। সেই প্রেক্ষিতেই সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আবারও মাঠে নামে পুলিশ।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসজুড়ে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে মোট ১,৪৫৮টি যানবাহন আটক এবং ১,০২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জরিমানার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টাকা, যার মধ্যে ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
আটক হওয়া যানবাহনের মধ্যে রয়েছে—
ব্যাটারিচালিত রিকশা: ৬৫৩টি
প্যাডেলচালিত রিকশা: ১৬৯টি
মোটরসাইকেল: ৪৪২টি
সিএনজি: ১২৮টি
লেগুনা: ১২টি
প্রাইভেটকার: ১৪টি
টেম্পু: ৭টি
পিকআপ: ২১টি
ট্রাক: ৬টি
বাস ও মাইক্রো: ১টি করে
ভ্যান: ২টি
এসএমপি সূত্র জানায়, অভিযান চলাকালে শহরের বিভিন্ন চার্জিং পয়েন্টে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নেওয়া হয়েছে— যাতে অবৈধ যানবাহন পুনরায় সক্রিয় না হয়।
অভিযানের বিরোধিতা করে গত মঙ্গলবার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চালকরা চৌহট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেন। তারা ১১ দফা দাবি তুলে ধরলেও প্রশাসন জানিয়েছে— কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী বলেন,
“নগরীতে শৃঙ্খলা ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে পুলিশ কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে, সে যেই হোক, আইনের আওতায় আনা হবে।”
অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আরও জানান,
“অভিযান চলমান রয়েছে, এবং সিলেট থেকে অবৈধ যানবাহন পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।”
এসএমপির এই কঠোর পদক্ষেপে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন নাগরিকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই অভিযান অব্যাহত থাকলে সিলেটে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে উঠবে— এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: