বিদেশী শিক্ষার্থীদের স্টাডি ভিসার অপব্যবহার রোধে যুক্তরাজ্য সরকার কঠোর নতুন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। কম উপস্থিতি, কোর্স সম্পন্ন না করা ও ভিসা প্রত্যাখ্যানের হারে নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাজ্য, “একজন ভেতরে, একজন বাইরে” নীতিতে ফ্রান্সের সঙ্গে পাইলট চুক্তি; ৫ শতাংশের বেশি ভিসা প্রত্যাখ্যান হলেই বিদেশী শিক্ষার্থী নেবার অনুমতি হারাবে বিশ্ববিদ্যালয়।
যুক্তরাজ্য সরকারের নতুন অভিবাসন নীতিমালায় বলা হয়েছে, যদি কোনও কোর্সে ৯৫ শতাংশের কম আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, অথবা ৯০ শতাংশের কম শিক্ষার্থী কোর্স সম্পন্ন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্টাডি ভিসা প্রদানে সীমাবদ্ধ করা হবে। একইসঙ্গে, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার ৫ শতাংশের বেশি, তাদেরও বিদেশী শিক্ষার্থী গ্রহণে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে।
সরকারের অভিবাসন কৌশলের অংশ হিসেবে, এই পরিবর্তনগুলি আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। এর লক্ষ্য হচ্ছে স্টাডি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে পরবর্তীতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার প্রবণতা কমানো।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় £১২.১ বিলিয়ন পাউন্ড আয় সরবরাহ করেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মোট আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ যোগান দিয়েছে।
গত বছর, ১৬,০০০ আশ্রয় আবেদনকারীর সাথে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর যোগসূত্র ছিল। অনেক শিক্ষার্থী ভিসা মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন, যার ফলে সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে তারা মানবিক নিরাপত্তার অজুহাতে ব্রিটেনে থাকতে চাইছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়েছেন, অভিবাসীদের ট্র্যাক ও নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত £১০০ মিলিয়ন পাউন্ড বাজেট রাখা হয়েছে, যার আওতায় ৩০০ অতিরিক্ত এনসিএ অফিসার নিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা নিয়মিতভাবে ভিসার অপব্যবহার করছে বলে চিহ্নিত করেছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। এসব দেশের ভিসা আবেদনকারীদের উপর থাকবে কড়া নজরদারি, যার মধ্যে থাকবে সোশ্যাল মিডিয়া বিশ্লেষণ এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট যাচাই।
যুক্তরাজ্য সরকারের এই নতুন নীতিমালার ফলে উচ্চশিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একদিকে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা হবে, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও আরও দায়িত্বশীলভাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বাছাই করতে বাধ্য করা হবে। তবে এই পদক্ষেপ বিদেশী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: