০৩ অক্টোবর ২০২৫ | ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলাদেশ
অপারেশনের পর আর জ্ঞান ফেরেনি, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে প্রাণ গেল খায়রুলের

image

ঠাকুরগাঁওয়ে বেসরকারি হাসপাতালে গলব্লাডার অপারেশনের পর জ্ঞান না ফেরায় মারা গেলেন খায়রুল ইসলাম। পরিবারের অভিযোগ—অপারেশন ও চিকিৎসায় চরম অবহেলার কারণেই প্রাণ হারিয়েছেন খায়রুল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা দায় অস্বীকার করেছেন।

ঠাকুরগাঁও শহরের মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গলব্লাডার অপারেশনের পর জ্ঞান না ফেরায় পাঁচ দিন আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা গেছেন খায়রুল ইসলাম (৫০)। বুধবার ভোররাতে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত খায়রুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের অভিযোগ, অপারেশন ও চিকিৎসায় চরম অবহেলার কারণেই এই মৃত্যু ঘটেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে মাম হাসপাতালে তার গলব্লাডার অপারেশন করা হয়। সার্জারি করেন ডা. রুহুল কুদ্দুস এবং অ্যানেসথেসিয়া দেন ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আলিরেজা আলবুরানী। তবে অপারেশনের পর টানা ৯ ঘণ্টা জ্ঞান না ফেরায় পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হলেও পরে তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে পাঁচ দিন পর তার মৃত্যু হয়।

রোগীর মেয়ে খুরশিদা জাহান খুশবু অভিযোগ করেন, স্বাভাবিকভাবে ২০-২৫ মিনিটের অপারেশন এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে। এরপর আর তার বাবার জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুধু বলেছিল “ঘুমের ওষুধ বেশি দেওয়া হয়েছে।” প্রতিবেশীরাও অভিযোগ করেন, বেসরকারি হাসপাতালের অপচিকিৎসায় একজন সুস্থ মানুষকে হারাতে হলো। তারা এটিকে এক ধরনের হত্যার শামিল বলে মন্তব্য করেন। খায়রুলের ভাতিজা বলেন, “অতিরিক্ত অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং অপারেশনের পর যথাযথ পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো তিনি আজ বেঁচে থাকতেন।”

অন্যদিকে মাম হাসপাতালের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু বলেন, “অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না। আইসিইউ সুবিধা না থাকায় আমরা দিনাজপুর মেডিকেলে রেফার করি। আমাদের পক্ষ থেকে অবহেলা ছিল না।” অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. আলিরেজা আলবুরানী বলেন, রোগীর পটাশিয়াম লেভেল বেড়ে যাওয়ায় জটিলতা দেখা দেয়, এজন্য দিনাজপুরে পাঠানো হয়। বুধবার বিকেলে খায়রুল ইসলামের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এদিকে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি সারোয়ার আলম খান জানান, “এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঠাকুরগাঁওয়ে অপারেশনের পর খায়রুল ইসলামের মৃত্যুতে এলাকায় শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।













রিলাক্স মিডিয়া/রকিবুল ইসলাম

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading