ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯ লাখ টাকার অবৈধভাবে মজুদ করা সার জব্দ করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) গভীর রাতে উপজেলার লাহেরী ইউনিয়নের ঠুমনিয়া পাগলা বাজার এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এক ব্যবসায়ীর গোপন গোডাউন থেকে জব্দ করা হয় ৭১৫ বস্তা সার, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৮ লাখ ৬০ হাজার ২৫০ টাকা।

জব্দকৃত সার ও মূল্য:
ইউরিয়া সার – ৪১৫ বস্তা (মূল্য: ৫,৬০,২৫০ টাকা)
এমওপি সার – ৩০০ বস্তা (মূল্য: ৩,০০,০০০ টাকা)
মোট ওজন – ৩৫.৭৫ মেট্রিক টন


এই বিপুল পরিমাণ সার মজুদ ছিল মো. করিম উদ্দিন আপন (৩২) নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন গোডাউনে। তিনি লাহেরী বাজারের লাইসেন্সধারী সার ডিলার মো. শাজাহানের ছোট ভাই। এলাকাবাসীর দাবি, শাজাহানের সারের একটি অংশই এই গোপন গোডাউনে রাখা হয়েছিল।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। অভিযান শেষে গোডাউনটি তাৎক্ষণিকভাবে সিলগালা করা হয় এবং করিম উদ্দিন আপনকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ ও সারের নিয়ন্ত্রিত বিতরণ বিধিমালা অনুযায়ী ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

প্রশাসনের বক্তব্য:
ইউএনও মফিজুর রহমান বলেন, “কৃষি খাতে সারের কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। কেউ যদি কৃষকের ক্ষতি করে অবৈধভাবে সার মজুদ করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অভিযান তারই অংশ।”

তিনি আরও জানান, জব্দ করা সার স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে এবং প্রাপ্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

কৃষি বিভাগের মতামত:
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে কৃষি মৌসুম চলছে, তাই সারের চাহিদা অনেক বেশি। এ সময় অবৈধভাবে সার মজুদ করলে তা সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং প্রকৃত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

কৃষকদের প্রতিক্রিয়া:
অভিযান চলাকালে আশপাশের অনেক কৃষক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানান।

একজন কৃষক বলেন, “চাহিদার সময় কিছু ব্যবসায়ী আমাদের বেশি দামে সার বিক্রি করে। প্রশাসনের আজকের উদ্যোগ আমাদের জন্য স্বস্তির।"











রিলাক্স মিডিয়া/ঠাকুরগাঁও