০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলাদেশ
মঠবাড়িয়ায় হাতপাখার বাট ধরতে চান ‘পল্টিবাজ’ ডাঃ রুস্তম

image

পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও এলাকায় ‘পল্টিবাজ’ খ্যাত ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার দল পরিবর্তনের কারণে এ এলাকায় তিনি পল্টিবাজ এমপি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরুতে ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন ডাঃ ফরাজী। সে সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের কারামুক্তির ইস্যু এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে তিনি জয়লাভ করেন। তবে নির্বাচনের পরপরই উপজেলা জাতীয় পার্টিকে বিভক্ত করে দলকে কার্যত অচল করে ফেলেন তিনি।

২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের জোয়ার দেখে ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচন করে দ্বিতীয়বার এমপি হন। তবে ১/১১ সময় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে তারেক রহমানকে ‘ক্রসফায়ারে দেওয়ার’ মতো বিতর্কিত মন্তব্য করে দলীয় সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। ফলস্বরূপ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন।

পরে ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের রাতের অন্ধকারে ভোটগ্রহণের অভিযোগ ওঠা নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। রাজনৈতিক সমালোচকদের মতে, ব্যক্তিগত স্বার্থে দলবদল করতে এবং যেকোনো শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে তিনি দ্বিধা করেন না।

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই সাবেক এমপির ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই) এ যোগদানের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। দলটির স্থানীয় পর্যায়ের কিছু নেতা শুরুতে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেও পরে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে আপত্তি প্রত্যাহার করা হয়। উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ডাঃ ফরাজী আসন্ন নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন।

এদিকে, এ খবরে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে তিনি বিগত সময়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছেন।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
তুষখালী বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ বলেন,

> “ডাঃ ফরাজী আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে দিনরাত শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন, সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছেন। এখন আবার এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তু সেটা আর মঠবাড়িয়ার মাটিতে হবে না।”



টিকিকাটা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক খোকন বলেন,

> “তিনি আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন এবং বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলার আসামি। আমরা তার অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাই।”



সাপলেজা ইউনিয়নের সমাজসেবক নাসির খান বলেন,

> “গত সতেরো বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেছেন। যে দল থেকেই আসুক, আমরা তাকে নির্বাচনী মাঠে প্রতিহত করব।”



এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ বলছেন মঠবাড়িয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে একাধিকবার দলবদল করা এই বিতর্কিত সাবেক এমপি হাতপাখার বাট ধরে আসন্ন নির্বাচনে কতদূর অগ্রসর হতে পারে সেটা নির্ভর করবে সাধারণ জনগণের ভোটের উপরে।














রিলাক্স মিডিয়া/মো.তানভীর হাসান

ভিডিও
Comments:
Sponsered Ad
Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement Advertisement

loading