দুই দিনের ব্যবধানে ৫ দশমিক ২ শতাংশ মূল্যহ্রাস, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুরও পতন। রেকর্ড দামের উল্লম্ফনের পর বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার প্রবণতায় আন্তর্জাতিক স্বর্ণবাজারে বড় দরপতন ঘটেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর মাত্র একদিন পরই বড় পতনের মুখে পড়ে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) লেনদেন শেষে স্বর্ণের দাম ৫ দশমিক ২ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৩০ দশমিক ৪০ ডলারে। করোনা মহামারির পর এটিই একদিনে স্বর্ণের দামের সবচেয়ে বড় পতন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বর্ণের দাম ইতিহাসের শীর্ষে ওঠার পর অনেক বিনিয়োগকারী দ্রুত লাভ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ‘profit-taking’ প্রবণতাই মূলত বাজারে দরপতনের প্রধান কারণ।
শুধু স্বর্ণই নয়, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা গেছে। স্পট সিলভার, প্লাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের দামেও উল্লেখযোগ্য হারে পতন হয়েছে।
বিশ্ববাজারে এই অস্থিরতা শুরু হওয়ার আগেই বাংলাদেশের বাজারে সোনার নতুন মূল্য কাঠামো ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে, ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বেড়ে ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মূল্য সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হয়েছে।
এদিকে, গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম ২.৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ২১১.৪৮ ডলারে নেমে আসে, যদিও একই সেশনে এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৭৮.৬৯ ডলার স্পর্শ করেছিল।
চলতি বছর সোনার দামে ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি দেখা গেছে। ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ডলার থেকে সরে গিয়ে বিকল্প নিরাপদ বিনিয়োগ খোঁজা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়—এসব কারণেই এই বৃদ্ধি ঘটেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া, সুদের হার কমার সম্ভাবনাও সোনার বাজারে জোরদার প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক দরপতন হয়তো স্বল্পমেয়াদী, তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনা এখনও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবেই থাকবে। বিশ্ববাজারের মুদ্রানীতি, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়নীতি আগামী মাসগুলোতে স্বর্ণবাজারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: