আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণে জোরালো পদক্ষেপ ও সর্বশেষ জরিপে বৃদ্ধি পেয়েছে বাঘের সংখ্যা। ‘বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুন্দরবনের সমৃদ্ধি’ এই প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫। আয়োজনে বন অধিদফতর।
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে আজ বন অধিদফতরের উদ্যোগে রাজধানীর বন ভবনের হৈমন্তি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বাঘ সংরক্ষণে নতুন দিকনির্দেশনার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
বিশ্ব বাঘ দিবসের সূচনা ২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলন থেকে। বাংলাদেশে এই দিবসটি প্রতিবছর ২৯ জুলাই পালিত হয়, যার মূল লক্ষ্য—বাঘের আবাসস্থল রক্ষা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
বন অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫টিতে। ২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১০৬টি। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত চালানো ক্যামেরা ট্র্যাপিং জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রিটে স্থাপন করা হয় ১২১০টি ক্যামেরা, যা ৩১৮ দিন ধরে সচল ছিল। ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ দল এ তথ্য বিশ্লেষণ করে। ১০ লাখের বেশি ছবি ও ভিডিও থেকে ৭২৯৭টি বাঘের আলাদা ছবি শনাক্ত হয়। এ জরিপে খরচ হয় ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বাঘসংখ্যার অতীত পরিসংখ্যান অনুযায়ী:
২০০৪ সালে ছিল প্রায় ৪৪০টি (২১টি শাবকসহ)
২০০৯ সালে অনুমান করা হয় ৪০০-৪৫০টি
২০১৫ সালে এসে নেমে আসে ১০৬-এ
২০১৮ সালের জরিপে বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪টি
সর্বশেষ, ২০২৪ সালে সংখ্যা ১২৫
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে একটি আশাব্যঞ্জক বার্তা। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সংখ্যা ধরে রাখতে হলে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র রক্ষা, অবৈধ শিকার বন্ধ এবং স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশ্ব বাঘ দিবস হোক বন ও বন্যপ্রাণীর টেকসই উন্নয়নের প্রতীক।
অনলাইন ডেস্ক
Comments: